Sunday 30 October 2016

আর্জেন্টিনার মেসির মুখে বাংলার বাঘ?

৩০শে অক্টোবর ২০১৬
তারা জানবে একুশ শতকের বাঘের নাম, যে কিনা শুধু গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার ত্রাসই নয়, মহাসমুদ্র সাঁতড়ে দুনিয়ার অপর প্রান্তে গিয়ে তার অবস্থান জানান দিতে পারে!



চিন্তার নিয়ন্ত্রণ


বাংলাদেশকে এদেশের মানুষ কেমন দেশ হিসেবে তুলে ধরবে, সেটা নির্ভর করবে দেশের মানুষ দেশ সম্পর্কে সত্যিকার অর্থে কি বিশ্বাস করে। অর্থাৎ নিজেকে কিভাবে মূল্যায়ন করে। এই মূল্যায়ন কিভাবে হবে, সেটা নির্ভর করবে দেশের সমাজ দেশের মানুষকে কি ধরনের চিন্তা দিচ্ছে। চিন্তাকে মানুষের মস্তিষ্ক পর্যন্ত পৌঁছে দেয়াটা অনেকভাবেই করা সম্ভব। তবে এক্ষেত্রে মিডিয়া যেন সবসময় এগিয়েই থাকে। ঊনিশ শতকে ছাপা মিডিয়া আসার পর, আর বিংশ শতকের শুরুতে ইলেকট্রনিক মিডিয়া আসার পর মিডিয়ার গুরুত্ব শুধুই বেড়েছে। আর মানুষের চিন্তাকে প্রভাবিত করতে পারার ক্ষমতা মিডিয়াকে শুধু শক্তিশালীই করেনি, তৈরি করেছে শক্তিশালী জাতি-গোত্র-ব্যক্তির যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে। মিডিয়ার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে চলে দিনরাত যুদ্ধ। যারা ক্ষমতায় থাকে, তারা চায় না মিডিয়া তাদের চিন্তা ছাড়া অন্য কোন চিন্তা প্রচার করুক, আর যারা ক্ষমতা থেকে দূরে, তারা চায় মিডিয়ার দখল নিতে। বাংলাদেশ পৃথিবীর বাইরে নয়; তাই বাকি পৃথিবীর নিয়মকানুন (সে যতই অপ্রীতিকর হোক না কেন) বাংলাদেশেও দৃশ্যমান। এলাকাভিত্তিক এবং দেশভিত্তিক পার্থক্য থাকলেও মূলতঃ পার্থক্য সামান্যই। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে আমরা একই ধরনের চিন্তার প্রসার দেখি। খুব কম মানুষই প্রশ্ন করে যে একই চিন্তা মানুষের মাঝে এলো কোত্থেকে? একটা সুন্দর ব্যাখ্যা অবশ্য দাঁড় করানো হয়ে থাকে, যাকে আদর করে নাম দেয়া হয়েছে গ্লোবালাইজেশন। অবশ্য যারা এর সৃষ্টি করেছেন, আজ তারাই প্রশ্ন তুলছেন যে এটা কার নিয়ন্ত্রণে। নিয়ন্ত্রণ – সেটাই কি আসল উদ্দেশ্য ছিল না? সেটা নিয়েই আজকের এই কথা।

কিছু শক্তিশালী মিডিয়া আমাদের দেশে এই নিয়ন্ত্রণমূলক কর্মকান্ডই করে যাচ্ছে। মানুষকে নিয়ন্ত্রণমূলক চিন্তা দিলে মানুষ নিয়ন্ত্রণে থাকবে – এটাই হলো মূল কথা। মানুষের চিন্তার একটা লিমিট ঠিক করে দেয়া। যারা সৃজনশীল কাজ করেন, তারা হয়তো মনে করতে পারেন যে অনেক ক্রিয়েটিভ কাজ করার সুযোগ তারা পাচ্ছেন। তবে ব্যাপারটা আসলে কি তাই? একজন সৃজনশীল মানুষকে যখন বলা হচ্ছে কিছু একটা ডিজাইন করে দিতে, তিনি তার সবটুকু সৃজনশীলতা নিংড়ে সেটা ডিজাইন করে দিচ্ছেন। খুব ভালো কথা; ক্রিয়েটিভ আউটপুট। কিন্তু তিনি একবারও প্রশ্ন করেননি যে, যেটা নিয়ে ডিজাইন করতে বলা হলো, সেটাকে কেন নির্বাচন করা হয়েছে। এই প্রশ্নটা যাতে তিনি না করেন, সেই ব্যবস্থাটার নামই হচ্ছে নিয়ন্ত্রণ। আমাদের দেশের বেশ কিছু শক্তিশালী মিডিয়া সেই কাজটাই করে।

প্রতিদিনের সকালটা নষ্ট করে দেয়া…

প্রায় প্রতিদিনই একটা করে খবর আসে, যা কিনা মানুষের প্রতিদিনের সকালটা নষ্ট করে। একটা মানুষ যখন সকালে একটা বাজে চিন্তা দিয়ে দিন শুরু করে, তার সারাদিন কেমন যাবে, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। একটা মানুষের সকালটায় তার চিন্তার ভিত্তিটাকে দুর্বল করে দেয়া গেলে সে সারাদিন আর শক্তিশালী কোনকিছু দিতে পারবে না – এটাই হলো সেই চিন্তার ভিত, যদি না সে দিনের মাঝে অন্য কোন উতস থেকে শক্তিশালী কিছু পেয়ে যায়। উদাহরনস্বরূপ, প্রতিদিনই খবর ছাপা হচ্ছে বিভিন্ন সূচক বা ইনডেক্স নিয়ে, যেখানে বাংলাদেশের অবস্থান হয় ১১০ নম্বরে, নতুবা ১৪০, অথবা একেবারে ১৭৬। যে মানুষটা এই সূচকে বিশ্বাস স্থাপন করবে, সে সারাদিনে দেশের সম্পর্কে পজিটিভ চিন্তা করতে পারবে না। তার মাথায় শুধু থাকবে আজকের দিনের কাজটা শেষ করে বাড়ি ফিরতে পারলেই হলো। আগামীকাল বা পড়শু আরও উপরে থাকবো, বা এক মাস পর আজকের অবস্থান থেকে উপরে থাকতেই হবে – এধরনের কোন চিন্তা থাকবে তার জন্যে সেকেন্ডারি। নিয়ন্ত্রণের চেষ্টার পদ্ধতি এটা, যার মাধ্যমে আমাদের অবস্থান সবসময় ১১০ বা ১৪০ বা ১৭৬ই থাকবে, কোনদিনই এগুবে না। যদি কখনো এগিয়েই যাই, তাহলে নিয়মগুলি পরিবর্তন করা হবে সূচকে আবারো আগের অবস্থানে ফেরত আনতে। এটাই নিয়ন্ত্রণ।

যা সবার কাছ থেকে আড়াল করে রাখা হয়…

এসব সূচক যাদের তৈরি, তাদের নিজেদের তৈরি করা কিছু সূচকই আবার গোপন রাখা হয়; বাকিগুলি সামনে আনা হয়। যেমন কয়জন জানেন যে বাংলাদেশের অর্থনীতি কাজাকস্তান, গ্রীস, পর্তুগাল, রোমানিয়া, চেক রিপাবলিক, হাঙ্গেরী, পেরুর মতো আরও অনেক দেশের অর্থনীতি থেকে বড়? কয়জন জানেন যে ভারত মহাসাগরে সমুদ্রসীমা থাকা দেশগুলির মাঝে কয়টি দেশের অর্থনীতি ২২০ বিলিয়ন ডলার বা তার চাইতে বেশি? আর কয়টি দেশ আছে, যাদের অর্থনীতি ২০০ বিলিয়ন ডলারের উপরে এবং একইসাথে যাদের জনসংখ্যা ১০০ মিলিয়নের বেশি? কয়টি দেশে বৃষ্টিপাতের আধিক্য আছে এবং একইসাথে তিন-তিনটি প্রধান নদীর সংগমস্থলে তিন-তিনটি সমুদ্রবন্দর রয়েছে, যা কিনা নদীপথে (সবচাইতে সস্তা যোগাযোগ ব্যবস্থা) দেশের অভ্যন্তরের সাথে সরাসরি সংযুক্ত? কয়টি দেশ আছে পুরো দুনিয়াতে, যেখানে প্রাকৃতিকভাবে দেশের স্থলভাগ প্রতি বছর বড় হচ্ছে? কয়টি দেশ আছে, যেখানে প্রায় পুরো দেশই চাষযোগ্য? কয়টি দেশের জনগোষ্ঠীকে ভৌগোলিকভাবে ভাগ করা সম্ভব নয় (অর্থাৎ জনগণ কতটা homogenous)? এগুলির সাথে এখন ২২০ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি যোগ করুন তো? এটাই কি প্রতিদিনের সংবাদ হওয়া উচিত ছিল না?

উপরে যে কয়টি দেশের নাম উল্লেখ করেছি, তার মধ্যে কাজাকস্তান একটি স্থলবেষ্টিত দেশ, যার সমুদ্র পর্যন্ত যেতে রাশিয়ার সহায়তা লাগে। হাঙ্গেরী এবং চেক রিপাবলিকেরও একই অবস্থা। রোমানিয়ার খোলা সমুদ্রে যেতে তুরস্কের অনুমতি লাগে। এই দেশগুলির বেশ কতগুলির সামনের দিনের অর্থনীতি আশাব্যাঞ্জক নয়; জনসংখ্যা কমে যাচ্ছে; অগ্রগতি ঋণাত্মক। আর বাংলাদেশ গত দুই দশকে পিছনে তাকায়নি। সারা দুনিয়ার অর্থনীতি দুইবার উঠেছে, দুইবার নেমেছে; অথচ বাংলাদেশের এতে যেন কিছুই হয়নি। বাংলাদেশের অর্থনীতি খুব শীঘ্রই ফিনল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড এবং চিলির অর্থনীতিকে অতিক্রম করতে যাচ্ছে। আইএমএফ-এর হিসেবে বাংলাদেশের অর্থনীতি পৃথিবীর ৪৬তম। কিন্তু এখানে আঞ্চলিক ব্যাপারগুলিকে জুড়ে দিলে হিসেব পালটে যাবে। যেমন বাংলাদেশ একইসাথে পূর্ব এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকার সাথে সমুদ্রপথে সবাসরি যুক্ত এবং এদের সকলের একেবারে মধ্যিখানে। এই অঞ্চলগুলিতে যেতে বাংলাদেশ অনেক ক্ষেত্রেই আঞ্চলিক bottleneck বাইপাস করতে পারে। আঞ্চলিক যোগাযোগ বৃদ্ধি পেলে এই সক্ষমতা আরও বাড়বে। বর্তমান দুনিয়াতে ভূরাজনৈতিক কেন্দ্র হচ্ছে ইউরেশিয়া+আফ্রিকা। বাংলাদেশ এই কেন্দ্রের যতটা কাছে অবস্থিত, ইউরোপ এবং আমেরিকার দেশগুলি সেই তুলনায় দূরে; সরাসরি সমুদ্র যোগাযোগ নেই বা তেমন ভালো নয়। অনেকগুলি আঞ্চলিক bottleneck তাদের অতিক্রম করতে হয়। ভারত মহাসাগর এখন সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ মহাসাগর। এই মহাসাগরের সাথে সরাসরি যুক্ত কয়টি দেশের অর্থনীতি ২২০ বিলিয়ন ডলারের উপরে এবং জনসংখ্যা ১৬০ মিলিয়নের উপরে? উপরে যে শক্তিশালী ফ্যাক্টরগুলি উল্লেখ করেছি সেগুলি যোগ করে দিই এর সাথে? এখন এই দেশকে কতটা দুর্বল মনে হচ্ছে?
 
বাংলাদেশে এসে মেসি হয়তোবা তার জনপ্রিয়তাটা কিছুটা বুঝতে পেরেছিলেন। তবে সেটা বাংলাদেশের প্রমোশনের জন্যে যথেষ্ট কিনা সেটা প্রশ্নসাপেক্ষ। মেসিই হতে পারে বাংলাদেশের সেই brand ambassador যাকে আর্জেন্টিনার মানুষ এবং বাংলাদেশের মানুষ উভয়েই পছন্দ করে।

বাংলাদেশের লিওনেল মেসি…

এর আগে আফ্রিকা নিয়ে লিখেছিলাম। আফ্রিকা আমাদের থেকে অনেক দূরে – এটাই হচ্ছে সেই নিয়ন্ত্রণমূলক subversion. প্রকৃতপক্ষে যা আমাদের জন্যে গুরুত্বপূর্ণ, তার কোন দূরত্ব নেই, বিশেষতঃ যখন আমাদের ভূকৌশলগত অবস্থান এতটা শক্তিশালী। এই অবস্থানকে অস্বীকার করা মানেই সেই নিয়ন্ত্রকের ফাঁদে পা দেয়া। তারা এটাই চায় – সারাজীবন তাদের পা ধরে বসে থাকতে হবে আমাদের; অথর্ব দেশ; ব্যর্থ রাষ্ট্র। এগুলি গীত শোনার সময় এখন আর আমাদের নাই। এখন সময় চিন্তা করার লিওনেল মেসিকে নিয়ে। মেসির আর্জেন্টিনা থেকে বাংলাদেশের সয়াবিন আসে। ব্রাজিল থেকে আমাদের ৮৬% চিনি আমদানি হয়। চিলি থেকে আসে কপারের একটা অংশ, যা দিয়ে এদেশের সকল প্রকার ইলেকট্রিক্যাল তার এবং যন্ত্রপাতি তৈরি হয়। বাংলাদেশের ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড ইকুয়েডরে জাহাজ রপ্তানি করেছে। আরও অনেক সুযোগ অপেক্ষা করছে সেখানে আমাদের জন্যে। মেসি আমাদের কাছে ল্যাটিন আমেরিকার প্রতিনিধি, যাকে পরিচয় করানোর কিছু নেই। কিন্তু আর্জেন্টিনার মানুষ কি জানে এখানে মেসির জনপ্রিয়তা কতটুকু? ব্রাজিলের মানুষ কি জানে এখানে মানুষ বিশ্বকাপের সময় তাদের দেশের পতাকা তৈরি করে (যদিও বানাতে গিয়ে ভুল হয়)? আমরা আর্জেন্টিনার মানুষের জন্যে মেসিকে নিয়ে একটা ডকুমেন্টারি তৈরি করি না কেন, যা আর্জেন্টিনার মানুষের সাথে বাংলাদেশকে পরিচয় করিয়ে দেবে? তাদের দেশের মানুষের কাছে বাংলাদেশকে নতুন করে চেনাবার চেষ্টা করি না কেন আমরা? মেসিই হতে পারে বাংলাদেশের সেই brand ambassador যাকে আর্জেন্টিনার মানুষ এবং বাংলাদেশের মানুষ উভয়েই পছন্দ করে।
 
ব্রাজিলের নৌবাহিনীর সাথে আমাদের নৌবাহিনী বেশ কয়েক বছর ধরে লেবাননের উপকূলে কাজ করছে। এতদিনে ব্রাজিলের নৌবাহিনীর প্রায় সবাই বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নাম জেনে গেছে। কাজেই যেদিন ব্রাজিলের কোন বন্দরে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজের ফ্লোটিলা শুভেচ্ছা সফরে যাবে, সেদিন সেখানে তারা পুরোনো অনেক বন্ধুকেই খুঁজে পাবে। কোটি কোটি টাকা ভারতীয় নর্তক-নর্তকীদের পেছনে না ঢেলে মেসির আর্জেন্টিনাতে আর ল্যাটিন আমেরিকায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর শুভেচ্ছা সফরের পেছনে ঢাললে একটা গুরুত্বপূর্ণ মহাদেশে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক-কৌশলগত দুয়ার খুলে যাবে।

আমরা কেন ব্রাজিলিয়ানদের বলি না যে বিশ্বকাপের সময় বাংলাদেশে ফুটবল খেলা নিয়ে যে পাগলামি হয়, সেটা তাদের মিডিয়াতে নিয়ে আসতে? এই দেশগুলির মানুষের কাছে বাংলাদেশকে কিভাবে তুলে ধরা হয়েছে সেটা আমরা না জানলেও অনুমান করতে পারি – খুব একটা ভালো কিছু না। ব্রাজিলের নৌবাহিনীর সাথে আমাদের নৌবাহিনী বেশ কয়েক বছর ধরে লেবাননের উপকূলে কাজ করছে। এতদিনে ব্রাজিলের নৌবাহিনীর প্রায় সবাই বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নাম জেনে গেছে। কাজেই যেদিন ব্রাজিলের কোন বন্দরে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজের ফ্লোটিলা শুভেচ্ছা সফরে যাবে, সেদিন সেখানে তারা পুরোনো অনেক বন্ধুকেই খুঁজে পাবে। ব্রাজিলের নৌবাহিনী অনেক পুরোনো; তাদের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা ওই এলাকা সম্পর্কে শিখতে পারবো। আর একইসাথে আমাদের দেশের নাম সেখানে জানিয়ে আসা ছাড়াও আমাদের দেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্প সম্পর্কে ল্যাটিন আমেরিকায় একটা জানান দিয়ে আসতে পারবো আমরা। কোটি কোটি টাকা ভারতীয় নর্তক-নর্তকীদের পেছনে না ঢেলে মেসির আর্জেন্টিনাতে আর ল্যাটিন আমেরিকায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর শুভেচ্ছা সফরের পেছনে ঢাললে একটা গুরুত্বপূর্ণ মহাদেশে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক-কৌশলগত দুয়ার খুলে যাবে। তারা জানবে একুশ শতকের বাঘের নাম, যে কিনা শুধু গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার ত্রাসই নয়, মহাসমুদ্র সাঁতড়ে দুনিয়ার অপর প্রান্তে গিয়ে তার অবস্থান জানান দিতে পারে!

কূপমুন্ডুক চিন্তা থেকে বের হয়ে আসার সময় হয়েছে আমাদের। মেসির মাঝে শুধু আবেগ না খুঁজে বাংলাদেশকে খুঁজতে হবে। দেশকে এবং দেশের মানুষকে প্রতিনিধিত্ব করতে হলে “দুর্বল দেশ” চিন্তা পরিত্যাগ করতে হবে। দূরত্ব কোন বাধা নয়; রবার্ট ক্লাইভের কাছে অষ্টাদশ শতকে দূরত্ব বাধা হয়নি। অথচ আমাদের মাথায় ঠিকই সেটা গুঁজিয়ে দিয়েছে তারা। বাংলাদেশের মানুষকে তারা বারংবার মনে করিয়ে দেয় যে দেশটা গরীব; অথচ ২০ কোটি অভুক্ত মানুষের দেশকে বলে পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী ভারত। পশ্চিমা প্রেসক্রিপশনে দেশ চালাবার সময় বহু আগেই গেছে। এখন এগুলি নিয়ে পত্রিকায় হাহুতাশ দেখলে হাসিই পায়। ভারত মহাসাগরে শক্তিশালী ভূরাজনৈতিক অবস্থানে থেকে মিউ মিউ করার সময় এখন নয়। শক্তিশালী দেশের মানুষ হাহুতাশ করে না; বাঘের গর্জন দেয়।

No comments:

Post a Comment